গ্রাম, শহর নগর সব জায়গায় আজ মোবাইল তার প্রভাব বিস্তার করেছে। ফোনের মাধ্যমে আজ গোটা দুনিয়া হাতের মুঠোয়, পুরো পৃথিবী যেন একটা পরিবার, সবার সাথে যেমন যোগাযোগ থাকে ঠিক তেমনি বিজ্ঞানের আশির্বাদে সবার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে।
বিজ্ঞানের এত বড় একটি আবিস্কার এই মোবাইল মানুষকে অনেক প্রশান্তি দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ঘটছে হিতের বিপরীতও, দেখা যাচ্ছে একটু অসচেতনতায় ঘটতে পারে অনেক বড় দুর্ঘটনা, এমনকি মৃত্যু ও হতে পারে। এসব ছোট /বড় দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্থান করলে দেখা যাবে শুধু একটি ছোট্ট ভুলই ঘটিয়েছে এই মহা বিপর্যয়। আর তা হলো সচেতনতার অভাব।
রাস্তাঘাটে চলার সময় বা হাটার সময় মোবাইল ব্যবহার করা:
এটা বর্তমানে সবচেয়ে প্রকট আকার ধারন করেছে। বিশেষত ছাত্র, যুব সমাজের মধ্যে এটা বেশী। ফেসবুকে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা বাইরে, বাজারে থাকার সময় ও ভুলে থাকতে পারে না তাদের প্রিয় ফেসবুক কে। তাই হাটতে হাটতে সামনের দিকে মনোযোগ ও দৃস্টি সামনের দিকে না থেকে, থাকে মোবাইল এর স্কিনে, ফলে যে কোন সময় ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
আর সেই দুর্ঘটনার মধ্যে হতে পারে:
- ছিনতাই: আপনার অসচেতনতা যদি ছিনতাইকারীর নজরে পরে তাহলে সে আপনার প্রিয় ফোনটি নিয়ে যেতে পারে ছিনতাই করে। হারাতে পারেন আপনার প্রিয় ফোন। আর ছিনতাইয়ের সময় বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে মার খাওয়ার ও সম্ভবনা থাকে।
- সড়ক দুর্ঘটনা: চলার সময় বা গাড়িতে মনোযোগ ও দৃষ্টির অভাবে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এরকম অনেক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে।
- মানষিক বিপর্যয়: হঠাত করে অনাকাংখিত ঘটনা অনেকে সামলে নিতে পারেন না, তাই অনেকের ঘটে যায় মানুষিক বিপর্যয়। এছাড়াও হার্ট এর সমস্যাধারি লোকদের হতেও পারে হার্ট ফেয়লর সহ অনেক সমস্যা
প্রতারণার ফাদে পা রাখা:
অনেক সময় বিভিন্ন প্রতারক চক্রের লোকজন, সহজ সরল লোকদের প্রতারিত করে থাকে যা ইতিপূর্বে গনমাধ্যমের কল্যানে দেশবাশি জানতে পেরেছে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি লোভ কে কাজে লাগিয়ে এমন ঘটনা ঘটায় প্রতারকরা। এক দিন আমার এক বন্ধুর ফোনে কল আসে, বলে আপনি লটারির মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছেন। আপনি পাবেন ৭০ লক্ষটাকা। আর সেই টাকা পাওয়ার জন্যে এই নাম্বারে ২ হাজার টাকা পাঠান। অনেকে টাকার লোভ সামলাতে না পেরে পাঠিয়ে থাকে টাকা যার ফল হিসেবে নিজের উপার্যিত টাকা বিসর্জন দেয়া ছাড়া আর কিছু হয় না। অথবা কোন নির্দিস্ট স্থানে আসতে বলে, কেউ যদি ভুলেও চলে যায় তাহলে তাকে ব্ল্যাক মেইল করে তার পরিবার থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চস্টা করে।
পীর, মাজারের খাদেম সেজে প্রতারণা:
এটাও একটা পরিচিত বিষয়, প্রায় সবারই জানা। মানুষের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে কিছু প্রতারক টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। দেখা যায় এতে মেয়েদের বেশী ধোকা দেয়। বিশেষত এরা রাত ১২ টার পরে ফোন দিয়ে বলে অমুক মাজার, উমুক পীর। প্রথমে কিছু প্রশ্ন করে, নিজে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইনি, তার পরেও বন্ধুদের কাছে শোনা -
- নামাজ পরেন বাবা?
- রোজা করেন বাবা?
- দান খয়রাত করেন বাবা?
- তারপর বলে, আপনার মনের আশা পূরণ হবে এবং তা কিভাবে হবে, তা জানতে ফোন ব্যাক করেন।
- আর কেউ যদি তা করে তাহলে সে বিভিন্ন ছলে বলে কৌশলে দান করার অযুহাত হিসেবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
প্রেমের ফাদ:
বর্তমানে এটা ব্যাপক আকার ধারন করেছে। প্রতারক চক্র প্রতারণার কৌশল হিসেবে মিস্টিকন্ঠা নারীদের ব্যবহার করছে। কোন ভাবে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলতে পারলে দেখা করতে গেলে, প্রতারকদের শিকারী হয়ে হারিয়ে থাকেন অনেক কিছু।
পরিশেষে একটা কথাই বলা যায় - প্রতারণা প্রতারনাই, তা যে ভাবেই হোক না কেন। একটু সচেতনতাই আপনাকে রক্ষা করতে পারে বিড়ম্বনা থেকে, বাঁচাতে পারে আপনার মুল্যবান সময় ও জীবন। আর মনে রাখবেন বিনাকষ্টে পাওয়ার আশা করেই মানুষ প্রতারিত হয়।
এখানে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার স্বত্ত্ব ও দায় লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত। আমাদের সম্পাদনা পরিষদ প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে এখানে যেন নির্ভুল, মৌলিক এবং গ্রহণযোগ্য বিষয়াদি প্রকাশিত হয়। তারপরও সার্বিক চর্চার উন্নয়নে আপনাদের সহযোগীতা একান্ত কাম্য।
যদি কোনো নকল লেখা দেখে থাকেন অথবা কোনো বিষয় আপনার কাছে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়ে থাকে, অনুগ্রহ করে আমাদের কাছে বিস্তারিত লিখুন।